‘আমার কাকু না খুব ইমোশনাল ছেলে একটা, তা জানিস, বাদল?’
‘তা জানি বইকি। আর বেশী বেশী কিচ্ছুটি হওয়া মোটে ও ভালো জিনিষ না’।
‘তার মানে, বাদল?’
দুই বন্ধুতে মিলে ছাদে বসে গল্প করছিলুম সেদিন বিকেলবেলা। ব্যাডমিন্টন খেলা আর ভালো লাগছিল না বলে ছেড়ে দিয়েছিলাম আধঘন্টা খেলেই। কাকু আমাকে তো স্কুলের মাঠে ও পাঠায় না খেলতে। তাই বাদল চলে আসে আমাদের বাড়িতে। তা আমাদের গোটা ছাদ ও বেশ মজবুত স্টিলের রড আর জাল দিয়ে ঘেরা আছে। সুরক্ষার জন্য।
বাদলের ভাষায় এই খেলাটায় ব্যাড ভাগ বেশী তাই শুরুতেই ব্যাড জুড়ে দিয়েছে। শুধু মিন্টন বলে ও একটা খেলা থাকা খুব উচিৎ ছিল।
অবশ্য আমাদের দু’জনের মধ্যে গল্প ও একটু আলাদা জাতের হয়েই থাকে। শুনলে কেউ মানতে চাইবেই না যে দু’টো মাত্র তেরো বছরের ছেলে বসে বসে এই সব কথা বলছে
বাদল বলল-‘কাকু বলে শুনিস নি। অতি কা ভলা না বোলনা, অতি কি ভলী না চুপ,
অতি কা ভলা না বরষনা, অতি কি ভলী না ধূপ। বেশী কিছুই ভালো নয়, চঞ্চল। আমাদের দুই বন্ধুর কারো কপালেই বিয়ে ও জুটবে না, তুই দেখে নিস চঞ্চল…হিঃ হিঃ…হিঃ…’
‘তা কেন, শুনি?’
ওই অতির ঠ্যালায়, আর কি ভাই। শাস্ত্রে লেখা আছে অতি সর্বত্র বর্জ্যয়েত…’
‘তার মানে, বাদল?…’
‘মানে হচ্ছে অতি কিছুই হওয়া ভালো নয়। যেমন মনে কর তোর আছে অতি রূপ…এক্কেবারে ঠিক পরীর মতন দেখতে….আগুনের মতন রূপ আর সৌন্দর্য। আমার মনে হয় ভগবান ভদ্রলোক মেয়ে গড়তেই শুরু করেছিলেন তোকে নির্ঘাৎ, সব কাজ টাজ শেষ করতে করতে সেটি বেমালুম ভূলে মেরে দিয়ে একটা ছেলে বানিয়ে দিয়েছেন। হিঃ…হিঃ…হিঃ…..’
‘আর আমার না কি আছে অতি বুদ্ধি…কাকু তো বলে…পাহাড়ের মতন বুদ্ধি…ভগবান ভদ্রলোকের ভূলেই হয়তো…অন্য কারো ভাগের বুদ্ধিটুকুও আমার মাথায় ভরে তাকে এক্কেবারে অজ মূর্খ বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন। এখন আমরা দু’জনেই অতির বর্গে ঢুকে হাবুডুবু খাই আর কি? আমাদের মেল ইগো ফ্যাক্টর তো একটু বেশী হবেই, ফলে মনে ক্ষোভ জন্মাবে, মনের মতন কিছু কাজ না হলেই আর শেষে বিক্ষোভ এবং ফাটাফাটি কিছু একটা হওয়া ঠেকায় কে?’
‘চঞ্চল, তুই হাউ টু অ্যাভয়েড ডিভোর্স বইটা পড়ে নিস, তাহলেই সব বুঝতে পারবি। কাকুর লাইব্রেরিতেই আছে। আমার বার দুই পড়া হয়ে গেছে। লেখক একজন আমেরিকান। রবার্ট স্নিডার। তিনি বলেছেন ছেলেরাই বেশী ইমোশনাল হয়, মেয়েরা মোটেই তা হয় না। আমাদের প্রচলিত ধারণা সব ভূল। তারা হয় সেল্ফ সেন্ট্রিক… হেডোনিস্টিক…কি বলে ..আত্ম সুখায়…তিনি ডিভোর্সের জন্য পঁচিশ ভাগ ছেলেদের আর পঁচাত্তর ভাগ মেয়েদের দায়ী করেছেন। আমেরিকায় তো সকলেরই দিনে তিনবার করে নাকি ডিভোর্স হয় হিঃ…হিঃ…হিঃ…’
‘মেল ইগো তো কন্ট্রোল করা যায় না, বাদল’
‘ভূল কথা। শুধু কন্ট্রোল নয় মডিফাই ও করা যায়, খুব সহজেই। অবশ্যই ঘটেতে কিছু থাকা চাই। বুদ্ধির ঢেঁকিদের কথা আলাদা। ক্ষোভ জন্মাবেই না তো বিক্ষোভ হয় কি করে? আজকাল ভূল ও উল্টো আমেরিকান জেন্ডার ইক্যুয়ালটির পাল্লায় পড়ে ফিমেল ইগো ফ্যাক্টর ও খুব বাড়ছে। এটা এক সাংঘাতিক জিনিষ। কন্ট্রোল করা ও কঠিন। মেল ইগোর মতন টেম্পোরারী নয়, লংগ লাস্টিং আর রিভেন্জিং। দুনিয়ায় যত বিখ্যাত প্রেমকথা আছে, সব অ্যানালাইজ করে ভদ্রলোক লিখেছেন যে লৈলা মজনু বা যে পেয়ারই হোক না কেন,তাদের মধ্যে মেয়েগুলো সবাই ছিল খুবই বুদ্ধিমতী, যা কিনা দুর্লভ জিনিষ। আর তারা সবাই ছিলো মেল ইগো কন্ট্রোলে অতি দক্ষ। নইলে শাহজাহান তাজমহল ও তৈরী করতো না, আর মুমতাজ মহল অমর হয়ে ও থাকতো না। জানিস, তিনি কিভাবে মারা যান। ষোলোতম সন্তানের জন্মের সময়। তবেই বুঝে নে, চঞ্চল’।
বাদল আর ও বলল--‘দেখিস না এক একটা মেয়েকে আমাদের দেশে এখন ও বলে বাপ সোহাগী মেয়ে। বাপের দুলাল ছেলেও থাকে অনেকে। এটা কি আপনা থেকেই হয়? না রে ভাই। আমাদের শ্রীরামচন্দ্র ছিলেন সেই ত্রেতাযুগের বাপের দুলাল ছেলে। যার অদর্শনে বাপের প্রাণটাই চলে গেল। কি সাংঘাতিক জিনিষ, বোঝ। ও সব মুনির শাপ টাপ সব বাজে কথা। আসল ব্যাপারটা চাপা দেবার জন্যে ওই সব কথা লেখা হয়েছে। তা তোর সমস্যাটা কি বল তো দেখি, চঞ্চল। কাকু কিছু বলেছে তোকে?’
‘না রে, ভাই। কাকু খুব ভালো ছেলে। আমাকে বকে ও না মারে ও না, উল্টে খুব করে আদরই করে। তবে দিনের দিন কাকু যেন আর ও বেশী মুডি…ইমোশনাল হয়ে যাচ্ছে। আমি ভয় পাচ্ছি। আগে কতো গল্প কবিতা লিখতো বসে বসে। নিজের পড়াশুনা তো করতোই। পত্রিকাতে পাঠাতোও। আর সব ছাপা ও হয়ে আসতো। আমার খুব ভালো লাগতো। কাকুর ইংরিজী, হিন্দী, বাংলা মিলিয়ে প্রায় তিনশোর ও বেশী পাবলিকেশন আছে’।
‘তবে আজকাল কি যে হয়েছে। কাকু,লিখতেই চায় না। আর কিছু লিখলেও পাঠায় না। অনেক জায়গায় তো আমিই লিখে কাকুর নামে পাঠিয়েছি। যেমন ধর গল্প কবিতা পত্রিকায় গত মাসের থীম ছিল দেশপ্রেম। কাকু লিখলোই না। অনায়াসে কাকু লিখতেই পারতো। হিন্দিতে কয়েক ডজন তেমন কবিতা আছে কাকুর, অনুবাদ করেও একটা পাঠাতেই পারতো। তা ও না। এই মাসের থীম হচ্ছে ক্ষোভ। কাকু নির্বিকার…কি করি বলতো?’
‘তা এই হচ্ছে তোর ক্ষোভের কারণ, চঞ্চল? তোর কাকু ও এর কবলেই পড়েছে মনে হয়। হয় যোগ্য সম্মান পায়নি, কোন অযোগ্য তা পেয়েছে, আর নয়তো ডিপ্রেশান…সব ক্রিয়েটিভ ট্যালেন্টদেরই হয়ে থাকে এমনধারা অবস্থা মাঝে মাঝে। দেখিস না ব্রাডম্যান বা তেন্ডুলকর ও জিরোতে আউট হয়। তা তুই তো শুধু পরীর দেশের রাজকুমার নয়. যথেষ্ট বুদ্ধিমান ছেলে। কাকুর মনটা ঠিক করে দিতে পারছিস না?’
‘না রে, ভাই’।
‘আচ্ছা, চল নীচে যাই। দেখি কাকু কি করছে’।
আমরা নেমে এলুম ছাদ থেকে। দেখি, কাকু আমাদের জন্য জলখাবার তৈরী করছিলো। বলল-‘আজ তাড়াতাড়ি খেলা শেষ হয়ে গেল। তোমাদের কি মন বসলো না খেলায়? তা বাদল শোন, তুমি ও কিছু খেয়ে যাও…’
বাদল বলল--‘কাকু, আজ তুমি খাও আগে আর আমি তোমাকে খাইয়ে দিই। তুমি বোস এই চেয়ারে। চঞ্চল, তুই ও বোস। আমি আগে হাত পা ধুয়ে আসি। তারপরে খাবার সার্ভ করব। কাকু, তুমি বসে পড়’।
বাদল সত্যি সত্যি খাবার নিয়ে এসে প্লেটে করে সাজিয়ে নিয়ে আমাকে দিয়ে কাকুর প্লেট নিয়ে গিয়ে বাচ্ছার মতন করে কাকুকে খাইয়ে দিতে শুরু করলো নিজের হাতে। কাকু ও বাদলের অপরূপ সুন্দর মুখের দিকেএকটুক্ষন চেয়ে থেকে হেসে ফেলল আর তারপরে চুপটি করে খেতে শুরু করলো। বাদল গিয়ে কাকুর গলা জড়িয়ে ধরলো বাঁ হাত দিয়ে। কাকু অতো সুন্দর ছেলেটাকে জড়িয়ে ধরে টেনে নিলো নিজের বুকের কাছে।
কাকুর খাওয়া শেষ হ’তে না হ’তে বাইরে কার ডাক শোনা গেল-‘আরে ও পন্ডিতজী, বাড়িতে আছো নাকি? যদি থেকেই থাকো তবে কোলাব্যাঙের মতন পেল্লায় এক লাফ মেরে বেরিয়ে এসো ভাই। জরুরী দরকার…’
কাকুর কোল থেকে লাফিয়ে উঠে বাদল ঠিক মা কালীর মতন অ্যাত্তো বড় এক জিভ কেটে বলল---‘এই মরেছে। নির্ঘাৎ কাল্লু আংকল। এখন উপায়? সঙ্গে অন্য কেউ আছে কি না, তা ও তো জানি না। তবে চঞ্চল, তুই তো দেখি খাবার নিয়ে বসেই আছিস আর শুধু দেখছিস। খাসনি কিছুই। খাবার কি দেখবার জিনিষ না কী? তা তুই এখন প্লেট নিয়ে পাশের ঘরে চলে যা দেখি। তোর সিক্যিউরিটি ওয়াচটা ও তো হাতে পরা নেই, তাই। আমি দরজা খুলি…’
আমি চলে আসতেই বাদলের সাথে কাল্লু আংকল এসে ঘরে ঢুকলো।
‘কি ব্যাপার কাল্লুজী? মুখ শুকনো কেন?’ কাকু জিজ্ঞাসা করলো।
‘আর বলিস না রে ভাই, পন্ডিতজী। হামার মনটা ভালো নেই। বড়োই …কি বলে ক্ষোভ হয়ে গেল তাই তোর কাছে এসে গেলো….’।
শুনে বাদল দারুণ মিষ্টি হেসে বলল---‘আংকল, আপনার ও মন ভালো নেই? নাঃ, এখন হাওয়াটাই খারাপ এসেছে মনে হয়। তা আপনি বসুন, আংকল। আগে এক গেলাস ঠান্ডা শরবৎ খেয়ে নিন। পরে নাস্তা আনছি আপনার জন্য। খেয়ে নিয়ে তবে কিন্তু যেতে পাবেন, আংকল। ততক্ষন বন্ধুকে আপনার ক্ষোভের কারণটা গুছিয়ে বলে ফেলুন। মন হাল্কা হয়ে যাবে আপনার’।
তা বাদল দেখি সত্যিই যাদু জানে। কাল্লু আংকল শরবতে চুমুক দিয়েই বন্ধু মানে কাকুকে যা বলতে শুরু করলো, আমি ও সেইটাই লিখে পাঠিয়ে দিচ্ছি কাকুর নামে । ভাল লাগলে ছাপবে নইলে না ছাপবে। তার আর আমি কি করবো? আমি কি ছাই কাকুর মতন সুন্দর করে সব গুছিয়ে নিয়ে লিখতে পারি না কি? মা তো বলেই যে আমি কোন কম্মের নই।
তা কাল্লু আংকল শুরু করলো----
‘আজ হামার অফিসে হঠাৎ তাড়াতাড়ি ছুটি হয়ে গেলো রে পন্ডিতজী একটা কন্ডোলেন্সের পরে। হামি ভি বাড়ী ফিরলাম জল্দিসে’।
‘মনটা হামার ভালো ছিলো না রে ভাই পন্ডিতজী। সত্যি বলছে হামিতে। আসলে হামি শাদী করলো সে তো বহুৎ দিন হইয়ে গেলো। লাল্লু পয়দা হয়ে সে ভি সাত বছরের ছেলে হয়ে গেলো। তা হামার বিবির আর পাও ভারী হলো না। ইটা কি কোনো ভালো বাত রে পন্ডিতজী? তুই বল।’
‘আমাদের সমাজে একটা ছেলে হ’লে সে ছেলেকে তো ছেলেই মনে করে না কেউ। হামার দুই ভাই আছে। ঠাকুরজীর কিরপায় হরেক জনের ঘরে আট দশটি করে ছেলে মেয়ে আছে রে, ভাই’।
‘কোথা ও সপরিবারে যেতে হ’লে দুইঠো অটো লাগে। একঠো তে আঁটে না। তবে না। পরিবার। তা তুই তো আর শাদী বিহা করলিনে রে ভাই, পন্ডিতজী। তুই কি বুঝবি পরিবারের মর্ম?’
‘জব জনসংখ্যা সে মানে বহুমতসে দেশে সরকার বনবে, তব সংখ্যা যাদের কম তাদের কে পুছবে রে, পন্ডিতজী? এহি সে তুই দেখ না রে ভাই ইয়ু০পি০ মে কভি যাদব মানে মুলায়ম যাদব সরকার বানাচ্ছে তো কভি মায়াবতী মানে এস০সি০র সরকার বনছে। আর তুই কিনা সে দেশমে একলা পড়িয়ে আছিস একটা পরের ছেলেকে নিয়ে। এ কি একটা কোনো বাত হলো রে, পন্ডিতজী?’
‘তবে তোর এই একটা ছেলে যা আছে না রে ভাই, এর কাছে একশো লাল্লু কুর্বান রে পন্ডিতজী। এ ভি হামী বলবে। হামী আসতে যে ভাবে ছুটে গিয়ে—‘ আসুন, আংকল’ বলে হামার হাত ধরিয়ে ঘরে এনে শরবৎ এনে খেতে বসিয়ে দিলো, হামার দিল তো বাগ বাগ হইয়ে গেলো রে পন্ডিতজী। সব গম ভুলিয়ে গেলো। সংখ্যা সে কি হোবে? ছাই হোবে? সংখ্যা তো ছাগল, গরুর হয়। গোনবার জন্য। পশুধন। যার যতো বেশী থাকবে, সে রইস আদমী হোবে ততো। মানুষের তো কোয়ালিটি চাই রে ভাই। নইলে তো সব এক ভেড়িয়া ধসান হোইয়ে যাবে রে, পন্ডিতজী’।
‘তা এই দেশের এহি ভাগ্য। কে কি করতে পারবে? সে যাক’।
‘তা হামি বাড়ী ফিরে কলিং বেল বাজিয়ে দিলো। কিন্তু, সব চুপচাপ। কোন শব্দ নেই ঘরবালির। তা ফিন বাজালো হামী বেল। ফিন দাঁড়িয়ে রইলো। দরজা আর খোলেই না কেউ । কি হলো রে বাবা? হামী তো ঘাবড়িয়ে গেলাম রে পন্ডিতজী। ঘরবালিকে কি কেউ ভাগিয়ে নিয়ে গেলো না কি রে বাবা?’
‘চার পাঁচবার ঘন্টি মারবার পরে দরওয়াজা খুললো তো হামী রেগে গিয়ে বললাম—‘বহরী হো গয়ি হো ক্যা জী? একঘন্টে সে দরওয়াজে পর খড়া হোকে বগুলে কি তরহ বেল বজায়ে যা রহা হুঁ আউর কিসি কো শুনাইয়ে নহি দে রহা হ্যায়। কিসসে গপ লড়া রহী থী?’
শ্রীমতিজী পর বরসতে হুয়ে কহ গয়া মৈ লেকিন ফির দেখা কি বহ তো থী হি নহি । কেবল সুপু্ত্র লাল্লু দিখা হাথ মে একঠো পতঙ্গ মানে ঘুড়ি লিয়ে হুয়ে।
হামী বললুম-‘ক্যা রে লাল্লু, তেরী মম্মী কঁহা গয়ী?’
‘ওহ তো বাজার গই হ্যায়।
‘পর তু ক্যা কর রহা থা, ইতনী দের তক?’
‘মৈ। মৈ তো ছত পর থা, পাপা। পতঙ্গ উড়া রহা থা।‘
‘তো ক্যা অভি ঘর মৈ আওর কোই ভি নহী হ্যায়?’
মানে হামী জানতে চাইলো কি কাম বালী দাই আই কি নহী। লেকিন লাল্লু তো হামরাই বেটা আছে না রে পন্ডিতজী। অউর বেটা বাপ সে বড়া না হো তো বেটা কাহে কা।
লাল্লু নে মুস্করাকর কহা –‘অভি তো ঘর মে আউর কোই নহি হ্যায়, পাপা। লেকিন পাঁচ ছ মহীনে মে জরুর সে আ জায়েগা, পাপা।‘
‘ক্যা? কৌন আ যায়েগা রে, লাল্লু?’
‘কেঁও? আপকো পতা নহী হ্যায় ক্যা, পাপা? মেরা এ ছোটা সা, প্যারা সা, নন্হা সা ভাই’।
‘সাচ? সাচ কহ রহে হো না, বেটা?’
হামী তো আনন্দে লাফিয়ে উঠলুম রে পন্ডিতজী শুনেই।
‘অউর নহী তো ক্যা, পাপা? মম্মী সে পুছ লেনা পাপা। হাঁ…..’।
‘এই না বলে ছেলেটা তো পতঙ্গ মনে ঘুড়ি ওড়াতে দৌড়ে ছাদে চলিয়ে গেলো আর হামার সেই যে না কথায় কি বলে …হাঁ… সেই শবরীর প্রতীক্ষা শুরু হইয়ে গেলো রে পন্ডিতজী’।
‘ঘরবালী ভি আসে না আর হামী ভি থাকতে পারে না। পানী তক পিলোম না রে ভাই পন্ডিতজী’।
একঘন্টা পরে ঘরবালী তো এলেন হেলিয়ে দুলিয়ে খোস মেজাজে, তো হামী দরবাজে পর হি রোক কে বললুম—‘কেঁও জী। লাল্লু কা এক ছোটা সা, প্যারা সা, নন্হা সা ভাই অব আনে বালা হ্যায় আউর হমে বতায়া তক নহী গয়া? মুঝে হি উল্লু বনানে কো ঠান রখী থী ক্যা? লেকিন মুঝে তো পতা চল হি গয়া হ্যায় না। মেরা নাম ভি তো কাল্লুরাম হ্যায় না,… কল্লুরাম রাম…..অব জো দাওত উড়ায়েঙ্গে ..না আজ, দাওত…সমঝী’
‘জানতী হুঁ তুম্হারা নাম। পর কব বতাতী তুম্হে? তুম বতানে ভি দো তব না?
‘অরে বাহ। অব ইহ ভি হমারী হি গলতী। হে ভগবান। ইসে হি কহতে হ্যায় কলিযুগ…ঘোর ঘোর কলিযুগ….’
‘অরে, ক্যা বকে যা রহে হো উল্টা সীধা পাগলোঁ কি তরহ? আজ হি তো দোপহর মে চিঠ্ঠী আই হ্যায়। এক পোষ্টকার্ড ডাকিয়ে নে লাল্লু কে হাথ মে হি তো দে গয়া থা…’
‘ক্যা? চিঠ্ঠী? পোষ্টকার্ড? মতলব…?
‘হাঁ, ইসবার জাড়ে মে তুম্হারে ভাই সাহব আ রহে হ্যায় কাশী ঘুমনে… সপরিবার। এক মহীনে কে লিয়ে। সমঝে? সাথ মে অপনে প্যারা সা, নন্হা সা, ছোটা সা নওয়ে সুপুত্র কো লেকর। ক্যা নাম লিখা থা?...........হাঁ…..তরুণ…..। তো তুম্হে যো তৈয়ারী বৈয়ারী করনী হো কর লেনা। রাশন ফাশন কা প্রবন্ধ কর লো….দাই তো হ্যায় হি অলগ সে এক খানা বনানেবালী কো ভি ঠিক কর লো কম সে কম এক মহীনে কে লিয়ে। ইস সর্দী মে মুঝসে নহী বন পায়েগা ইতনে লোগো কা খানা রোজ রোজ। হাঁ নহী তো।
‘তুম তো হর সময় রহতে হী হো ঘোড়ে পর সওয়ার। কোই তুম্হে কুছ কহে ভি তো কৈসে?’
‘অব চলো হটো ভি সামনে সে’।
‘অন্দর তো জানে দো’।।
‘ম্যায় তো চুপ রে পন্ডিতজী। …..’